
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিরাপদ, সশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষে “নিরাপদ অভিবাসনে তথ্য সহায়তা” এই শ্লোগানে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লা জেলার ২০টি ইউনিয়নে কর্মশালার আয়োজন করেছে। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে দেবিদ্বারের ফাতেহাবাদ ও মনোহরপুর ইউনিয়ন, বরুড়ার উপজেলার শাকপুর ইউনিয়ন, ব্রাহ্মণপাড়ার শশীদল ও মালাপাড়া ইউনিয়ন, চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ও শ্রীপুর ইউনিয়ন, মুরাদনগরের ছালিয়াকান্দি, বাবুটিপাড়া ও পাহাড়পুর ইউনিয়ন, দাউদকান্দির বারপাড়া ও সুন্দলপুর ইউনিয়ন, চান্দিনার গোল্লাই ও কেরণখাল ইউনিয়ন, হোমনার চান্দেরচর ও জয়পুর ইউনিয়ন, লাকসামের কান্দিরপাড় ও গোবিন্দপুর এবং মেঘনা উপজেলার মানিকারচর ও লুটেরচর ইউনিয়ন।
সর্বশেষ (১৯ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার মেঘনা উপজেলার লুটেরচর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস এবং অভিবাসী তথ্য কেন্দ্র বাংলাদেশের (এমআরসি) আয়োজনে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক সচেতনতামূলক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বৈদেশিক কর্মসংস্থানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির লক্ষে আয়োজিত এ কর্মশালায় মেঘনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, লুটেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্যগণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, সাংবাদিকবৃন্দ, মাদ্রাসার শিক্ষক, ইমাম ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ ৩০ জন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে অভিবাসী তথ্য কেন্দ্র বাংলাদেশের (এমআরসি) আয়োজনে সার্বিক সহায়তা প্রদান করে।
জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক দেবব্রত ঘোষ তাঁর উপস্থাপনায় নিরাপদ, নিয়মিত, সুশৃঙ্খল এবং দায়িত্বশীল অভিবাসন নিশ্চিতকরণ, মানব পাচার রোধ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রক্রিয়ায় মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ব নিরসন, উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হ্রাস, অভিবাসী কর্মীর অধিকার সুরক্ষা, অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা ও সচেতনতার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, জেনে বুঝে, প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হয়ে বিদেশ গেলে, অর্থ-সম্মান দুটোই পাওয়া যাবে। মিথ্যা তথ্যের উপর নির্ভর করে বা অন্যের প্রলোভনে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত না নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও তিনি নিরাপদ অভিবাসনের বিভিন্ন আইন, বিধি ও নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করেন এবং করোনাকালীন দূর্যোগ মোকাবিলায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রাণালয়ের বিভিন্ন কল্যাণমূলক উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও নারী অভিবাসনের ঝুঁকি, সম্ভাবনা এবং সুবিধাসমূহ উল্লেখ করেন। কর্মশালায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, বোয়েসেল, বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে অবস্থিত শ্রম কল্যাণ উয়িং এবং বায়রা’র কার্যক্রম নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।
মেঘনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সাইফুল্লাহ মিয়া রতন বলেন, এ ধরণের তথ্য প্রচার জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এবং এ ধরনের কর্মশালা মেঘনা উপজেলার সব ইউনিয়নে আয়োজনের আহবান জানান। নিরাপদ অভিবাসন বিষয়েও ইউনিয়ন পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।